মেজর জেনারেল এ কে মোহাম্মাদ আলী শিকদার পিএসসি (অব.): মুহুর্মুহু রাশিয়ার রকেট আর কামানের গোলার আঘাতে কিয়েভ, খারকিভ আর মারিউপল শহরের বড় বড় অট্টালিকা মুহূর্তের মধ্যে মাটিতে ধসে পড়ছে। কেউ ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে মরছে তো কেউ আবার প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে পালানোর পথে গুলিবদ্ধ হয়ে রাস্তার ওপর পড়ে থাকছে। বেঁচে যাওয়া মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে একটু নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ছুটে পালাচ্ছে। মারিউপলের এক গর্ভবতী নারী গুলিবিদ্ধ হয়ে গর্ভের সন্তানকে বাঁচানোর শেষ চেষ্টায় পেট চেপে ধরে একটা গাড়িতে ওঠার চেষ্টা করছে। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার সর্বাত্মক সামরিক অভিযানের ফলে যুদ্ধক্ষেত্রের অতি সামান্য একটা চিত্র লেখার শুরুতে তুলে ধরার চেষ্টা করলাম। যুদ্ধ মানেই ধ্বংস, মানবতার পরাজয় ও মানবিক বিপর্যয়। তারপরও প্রাগঐতিহাসিক যুগ থেকে যুদ্ধ চলছে, থামছে না। সেই আদিকাল থেকেই সবল শক্তিশালী রাষ্ট্র দুর্বল রাষ্ট্রকে দখল এবং শাসন, শোষণ ও লুণ্ঠন চালিয়েছে। ষষ্ঠদশ শতাব্দী থেকে শুরু করে বিংশ শতাব্দীর ষাট-সত্তর দশক পর্যন্ত ইউরোপের শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলো উপনিবেশ বানিয়া যথেচ্ছা শোষণ ও লুণ্ঠন করেছে। পৃথিবীব্যাপী দুর্বল রাষ্ট্রগুলোর ওপর দখলদারিত্ব ও উপনিবেশ বজায় রাখার জন্য ইউরোপের রাষ্ট্রসমূহ নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাতে লিপ্ত থাকায় পর্যায়ক্রমে ইউরোপ থেকেই দুটি বিশ্বযুদ্ধের সূচনা হয়। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে একটা কৌতুক ছিল এরকম খানাপিনা নাহি খায়া গ্লাস তুড়ে আটআনা। স্বার্থের দ্বন্দ্বে যুদ্ধ যারা বাধায় তারা তো আছেই সঙ্গে পক্ষহীন শান্তিকামী দেশের অগণিত নিরীহ মানুষ মহাবিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে, বিনাদোষে মৃত্যুর শিকার হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারতবর্ষ ব্রিটিশ উপনিবেশ ছিল। জাপানি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য যুক্ত বাংলার সমস্ত চাল, গমসহ সব খাদ্যদ্রব্য এবং রেল ও নৌযানসহ চলাচলের সব বাহন ব্রিটিশ সেনাবাহিনী জব্দ করে নেয়। ফলে পুরো বেঙ্গল ১৯৪৩ সালে মহাদুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়ে, যেটি পঞ্চাশের মন্বন্তর নামে পরিচিত। কারণ, ওটা ছিল বাংলা ১৩৫০ সন। সেই দুর্ভিক্ষে ৩০-৪০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। অসমাপ্ত আত্মজীবনীর এক জায়গায় বঙ্গবন্ধু লিখেছেন। যুদ্ধ করে ইংরেজ, আর না খেয়ে মারা যায় বাংলার মানুষ। এই কথাগুলো এখানে উল্লেখ করলাম এই কারণে যে, রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের পরিণতিতে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী অর্থনীতির ওপর বড় আঘাত আসতে শুরু করেছে।
সব দেশেই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ক্রমশ ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ এখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থায় আছে। এই যুদ্ধ যদি দীর্ঘায়িত হয় এবং আরও বিস্তার ঘটে তাহলে বিশ্বব্যাপী সাধারণ মানুষের কী অবস্থা হবে তা সহজেই অনুমেয়। সুতরাং সব আন্তর্জাতিক বিধিবিধান লঙ্ঘন করে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়া যে আগ্রাসন ও আক্রমণ চালিয়েছে তা সারা বিশ্বের শান্তিকামী মানুষের জন্য অত্যন্ত দুঃসংবাদ ও অশনিসংকেত। তাই এই যুদ্ধ অতি সত্বর থামানো দরকার। কিন্তু আপাতত তার কোনো লক্ষণ নেই বরং আশঙ্কা আছে এই যুদ্ধের আরও বিস্তার ঘটতে পারে। এবার যুদ্ধক্ষেত্রের চলমান পরিস্থিতির একটু সামান্য বর্ণনা দিই। এই লেখাটি যখন লিখছি তখন যুদ্ধের তৃতীয় সপ্তাহ শেষ হয়ে চতুর্থ সপ্তাহের শুরু। রাশিয়ান সশস্ত্র বাহিনীর শক্তিমত্তার তুলনামূলক বিবেচনায় বেশির ভাগ বিশ্লেষকের ধারণা ছিল ৭-১০ দিনের মধ্যে কিয়েভ দখল হয়ে যাবে, জেলেনস্কি সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে রাশিয়ার লক্ষ্য রিজিম পরিবর্তন ও ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। যুদ্ধ অভিযানের প্রাথমিক কৌশল ও ফোর্সের মোতায়েন বিন্যাস দেখে মনে হয়েছে রাশিয়ার সমরবিদগণের ধারণাও হয়তো একই রকম ছিল। কিন্তু রাশিয়ার সেই ত্বরিত লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্য সফল হয়নি। দক্ষিণে ডনবাস অঞ্চল, দক্ষিণ-পশ্চিমের শহর খেরসন দখল এবং পূর্ব-উত্তরে যথাক্রমে বড় শহর খারকিভ ও রাজধানী কিয়েভের কাছাকাছি পৌঁছলেও বড় কোনো শহর রুশ বাহিনী এখনো দখলে নিতে পারেনি। মিলিটারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল শহর খারকিভ, সমুদ্রবন্দর থেকে রকেট ও শক্তিশালী কামানের গোলা নিক্ষেপ করায় ধ্বংসলীলা বাড়ছে। কিন্তু শহরের ভিতরে রুশ বাহিনী প্রবেশ করতে পারছে না। শহরের ভিতরে যুদ্ধ হতে পারে আরও রক্তক্ষয়ী এবং সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। যুদ্ধের শুরুতে বিমান ও নৌবাহিনী স্বল্পতম ব্যবহার দেখে মনে হয়েছে যুদ্ধ সর্বাত্মকভাবে শুরু করলেও সমর শক্তির সর্বাত্মক প্রয়োগ রাশিয়া করেনি। হয়তো রাশিয়ার ধারণা ছিল বেসামরিক লোকজনের ক্ষয়ক্ষতি যতদূর সম্ভব কম রেখে দ্রুতগতিতে সামরিক ও রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে। কিন্তু তা হয়নি, যে কথা একটু আগেও উল্লেখ করেছি। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী অপ্রত্যাশিত শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। এতে অনেক বিশ্লেষকই হতভম্ভ ও বিস্মিত। ফলে রাশিয়ার প্রাথমিক পরিকল্পনা অনেকটাই নড়বড়ে হয়ে গেছে। তবে ন্যাটো বাহিনী যদি শেষ পর্যন্ত যুদ্ধে না জড়ায় তাহলে বিপুল ধ্বংসযজ্ঞের মধ্য দিয়ে ইউক্রেন রাশিয়ার দখলে আসবে বলে ধারণা করা যায়। তবে রাশিয়াকে সে পর্যন্ত পৌঁছতে মার্চ-এপ্রিল পেরিয়ে সে পর্যন্ত গড়াতে পারে। তাতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞার বিরূপ প্রভাব ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী যেভাবে ছড়িয়ে পড়েছে সেটি এক সময় এশিয়া-আফ্রিকার কোথাও কোথাও দুর্ভিক্ষ নেমে আসতে পারে। ইউক্রেন সেনাবাহিনীর প্রতিরোধ ভেঙে শহরগুলো দখল করার লক্ষ্যে যুদ্ধকৌশল কী হতে পারে সে সম্পর্কে চেচনিয়া যুদ্ধে গ্রোজনি ও সিরিয়ার যুদ্ধে আলেপ্প শহর দখলে রাশিয়ান সেনাবাহিনীর গৃহীত কৌশলের কথা অনেকে সামনে আনছেন। শহরের মধ্যে বেসামরিক এলাকায় এলোমেলোভাবে একটু পরপর স্বল্প ক্ষমতার কিছু রকেট ও কামান আক্রমণ চালিয়ে মানুষের মধ্যে ভীতির সৃষ্টি এবং শহর ত্যাগে বাধ্য করা। তারপর প্রচন্ড বিমান, রকেট ও কামান হামলা চালিয়ে প্রতিরোধ যুদ্ধের ব্যূহ ভেঙে দেওয়ার পর স্থল অভিযানের মাধ্যমে শহরগুলো দখলে নেওয়া। এরকম হলে ধ্বংসযজ্ঞ ও বেসামরিক হতাহতের সীমা থাকবে না। কথা উঠছে যুদ্ধের শেষ কীভাবে হতে পারে। সম্ভাব্য কয়েকটি বিকল্প নিয়ে একটু আলোচনা করি। প্রথমত, প্রচন্ড ধ্বংসযজ্ঞ ও রাশিয়ান সেনাবাহিনীর একচ্ছত্র বিজয়ের মধ্য দিয়ে ইউক্রেনের বর্তমান সরকারের পতন ও সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ ঘটবে। তারপর সমগ্র ইউক্রেন কি ক্রিশিয়ার মতো রাশিয়ার অংশ হবে, নাকি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকবে তা এখনো বলা যায় না। দ্বিতীয় বিকল্পে রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে একটা সমঝোতা হতে পারে। তাতে ইউক্রেনের স্বাধীনতা রাশিয়া মেনে নিতে পারে যদি- এক. ইউক্রেন কখনো ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দিবে না, এই মর্মে অঙ্গীকার করে। দুই. ডনবাস অঞ্চলের ডোনেস্ক ও লুইস্কিকে ইউক্রেন দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে মেনে নিয়ে স্বীকৃতি দেয়। তিন. ক্রিময়া রাশিয়ার অবিচ্ছেদ্য অংশ এই স্বীকৃতি ইউক্রেনকে দিতে হবে। চার. ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সংখ্যা সীমিত থাকবে এবং রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর একটা অংশ সেখানে অবস্থান করবে, যেভাবে ষাট ও সত্তর দশকে পূর্ব ইউরোপের জেলসমূহে সোভিয়েত সেনাবাহিনী ছিল। আর তৃতীয় বিকল্প পশ্চিমা বিশ্ব যদি রাশিয়ার অভ্যন্তরে যে কোনো ধরনের অভ্যুত্থান ঘটিয়ে পুতিনকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারে তাহলে দৃশ্যপট সম্পূর্ণ পাল্টে যাবে। কিন্তু বর্তমান চীন-রাশিয়ার সীমাহীন সম্পর্ক এবং ভূ-সামরিক স্বার্থের গোলক ধাঁধায় ভারতের অবস্থান দেখে মনে হয় তৃতীয় বিকল্প স্বল্প সময়ের মধ্যে ঘটে যাবে তা বলা কঠিন। তাহলে কি প্রথম ও দ্বিতীয় বিকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে যুদ্ধ শেষ হবে এবং পশ্চিমা বিশ্ব সেটা মুখ বন্ধ করে মেনে নিবে। আমার কাছে তা মনে হয় না। সংকট আরও ঘনীভূত ও দীর্ঘায়িত হবে এবং এর শেষ কোথায় তা এখন প্রিডিকট করা যাবে না। সম্ভাব্য কিছু দিক নিয়ে আলোচনা করা যায়। সামরিক, অর্থনৈতিক, বিজ্ঞান প্রযুক্তি, মেধা ও পান্ডিত্যে এবং বিশ্বব্যাপী প্রভাব, অর্থাৎ হার্ড ও সফট পাওয়ার মিলে আমেরিকা অন্তত আরও কয়েক দশক ধরে বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তি থাকবে। একটা পরিকল্পিত সময়ের মধ্যে বিকল্প পন্থায় রাশিয়ার তেল ও গ্যাসনির্ভরতা থেকে ইউরোপ বেরিয়ে আসার চেষ্টা করবে। ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো সামরিক শক্তি আরও বৃদ্ধি করবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর নজিরবিহীনভাবে জার্মানি এবারই প্রথম একবারে ১০০ বিলিয়ন ইউরোপ সামরিক বাজেট ঘোষণা করেছে। চলমান ঘটনার মধ্য দিয়ে মতদ্বৈততা কমে আমেরিকা ও ইউরোপের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে। সুতরাং রাশিয়া কর্তৃক ইউক্রেন দখলের মধ্য দিয়ে সব শান্ত ও স্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে তা ভাবনায় আসে না। ১৯৭৯ সালের ডিসেম্বরে আফগানিস্তানে সামরিক অভিযান, দখল ও প্রায় ৯ বছর ধরে প্রতিরোধ যুদ্ধের মোকাবিলায় সামরিক শক্তির ব্যাপক ক্ষতিসাধন শেষে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পথ ধরে সে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় তাতে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন ত্বরান্বিত হয়। তখনো একই রকম পরিস্থিতি যে, পাকিস্তানের প্রক্সিতে আফগানিস্তান আমেরিকান বলয়ের মধ্যে চলে যাচ্ছে এই আশঙ্কায় সোভিয়েত ইউনিয়ন সেখানে সামরিক অভিযান চালায়। আফগানিস্তানের মতো ইউক্রেনেও রাশিয়ার দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ শুরু হবে। পূর্ব ইউরোপে অবস্থানরত ৩০-৪০ লাখ শরণার্থীর মধ্য থেকে হাজার হাজার গেরিলা বাহিনীকে ন্যাটোর পক্ষ থেকে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণসহ আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে ইউক্রেনের ভিতরে পাঠাবে। ইউক্রেনের গ্রাম এলাকা সমতল ভূমি হওয়ায় সেই গেরিলা যুদ্ধটি হবে শহরকেন্দ্রিক, যাকে ইংরেজিতে বলা হয় আরবান গেরিলা ওয়ারফেয়ার। এটা একদিকে যেমন রক্তক্ষয়ী হবে, তেমনি রাশিয়ার সমর্থিত প্রশাসন একপর্যায়ে এসে অকার্যকর হয়ে পড়বে। শিল্পক্ষেত্রসহ সব জায়গায় উৎপাদনশীলতা ভেঙে পড়বে। তখন ইউক্রেনের জনগণ গেরিলাদের সমর্থন দিবে, নাকি রাশিয়াকে সমর্থন দিবে, নাকি নিষ্ক্রিয়-নিরপেক্ষ থাকবে, সেটাই হবে ডিসাইসিভ ফ্যাক্টর।
অন্যদিকে আমেরিকাসহ পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ আরও তীব্রতর করবে। এক সময়ে এসে ইউক্রেনের অভ্যন্তরে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ চালানো রাশিয়ার জন্য সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে অসম্ভব হয়ে পড়বে। সেরকম অবস্থায় সবকিছু ছেড়ে দিয়ে আফগানিস্তানের মতো রাশিয়ার সেনাবাহিনী যদি খালি হাতে ফেরত আসে তাহলে পুতিনের পক্ষে আর ক্ষমতায় থাকা সম্ভব হবে না। সেই পরিস্থিতিতে বরিস ইয়েলিৎসেনের মতো বিদ্রোহী ও পশ্চিমাপন্থি কেউ রাশিয়ার ক্ষমতায় চলে এলে আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবে না। সে রকম হলে আমেরিকার জন্য এক ঢিলে দুই পাখি শিকারের মতো ফল হবে। এটা এখন সবাই জানেন একবিংশ শতাব্দীতে আমেরিকার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী চীন এবং তার জন্য প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রটি এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চল। পুতিনের নেতৃত্বে রাশিয়ার সামরিক অর্থনৈতিক উত্থান এবং চীনের সঙ্গে সীমাহীন সম্পর্ক বর্তমানে যেভাবে আছে, সেখানে যদি পুতিনের পতন ঘটে তাহলে পশ্চিম ফ্রন্টে সম্পূর্ণ দুশ্চিন্তামুক্ত হয়ে পূর্ব ফ্রন্টে সর্বশক্তি নিয়োগের সুযোগ পাবে আমেরিকা। তবে এই বিশ্লেষণ শুধু অতীত ও বর্তমানের জ্ঞাত পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে করা। এটা কোনো জ্যোতিষমনস্ক কথা নয়। যে কোনো একটি নতুন বড় ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আবার নতুন কোনো সম্ভাবনা ও শঙ্কার জন্ম হতে পারে।
লেখক : রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক। সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন